স্বদেশ ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জে জমে উঠেছে কাঁঠালের হাট। শীতলক্ষ্যার তীরে কয়েক যুগ ধরে বসে এ হাট। নদীপথে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কাঠাল এনে পাইকারি বিক্রি চলে। মওসুমী ফল বিক্রির এটা নারায়ণগঞ্জের একটা ঐতিহ্য। ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নৌ পথে কাঁঠাল এনে বিক্রি করছেন এখানে।
বাজারের পাইকারি আড়ৎদার থেকে শুরু করে রাস্তার পাশে চৌকিতে কিংবা ভ্যানে করে বিক্রি করা খুচরা কাঁঠালের ব্যবসায়ী সকলেই কাঁঠাল কিনছেন এখান থেকে। আকারভেদে নানান আকৃতির কাঠালগুলো বিক্রি হচ্ছে, বিভিন্ন দামে।
সরেজমিনে নগরির চারারগোপের ফলের আড়ৎ’র বিভিন্ন কাঁঠালের বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও ভালুকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঁঠালের স্থানীয় নাম রয়েছে।
লাউয়ের মতো দেখতে কাঁঠালকে লাউ কাঁঠাল, মধু রঙের কাঁঠালকে মধুরসা কাঁঠাল, খাওয়ার অংশ শক্ত এমন কাঁঠালকে চাইলা কাঁঠাল, দুধের মতো স্বাদ ও রঙ এমন কাঁঠালকে দুধরসা কাঁঠাল বলা হয়।
বিক্রেতারা জানান, আকার, ওজন, রং, স্বাদের ওপর ভিত্তি করে কাঁঠালের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে এখানে। যেমন, পানিরসা কাঁঠাল প্রতি ১০০ পিস ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, দুধরসা কাঁঠাল প্রতি ১০০ পিস ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা, মধুরসা কাঁঠাল প্রতি ১০০ পিস ৭ হাজার টাকা, বেল কাঁঠাল প্রতি ১০০ পিস ২ থেকে ৩ হাজার টাকা, শসা কাঁঠাল প্রতি ১০০ পিস ২ থেকে ৩ হাজার টাকা, হাজারী কাঁঠাল প্রতি ১০০ পিস ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা, কুমুর কাঁঠাল প্রতি ১০০ পিস ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা, টেমা কাঁঠাল প্রতি ১০০ পিস ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ময়মনসিংহ থেকে নৌ পথে কাঁঠাল আনার পর, চারারগোপের এই আড়ৎ’র মধ্যে তা বিক্রি করেন আব্দুল বারেক। তিনি জানান, ফালগুণ মাসে ৫ লাখ টাকা খরচে প্রায় তিনটি কাঁচা কাঁঠালের বাগান কিনেছিলেন। আষাঢ় মাস আসতেই সেইসব গাছের কাঁঠালগুলো পেকে যাওয়াতে এখন বিক্রির পালা। আর মূল্য বেশি পাওয়ার কারণে তিনি চারারগোপের এই হাটেই কাঁঠাল বিক্রি করেন।
কবির মিয়া নামে আরেক কাঁঠালের বিক্রেতা বলেন, আমি প্রতি বছরই কাঁঠালের মৌসুম এলে, সাধারণত নারায়ণগঞ্জেই কাঁঠাল বিক্রি করি। কারণ দেশের অন্যান্য ফলের বাজাগুলেতেও কাঁঠালের চাহিদা রয়েছে তবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে একটু বেশিই। আর দামও ভালো পাওয়া যায় এখানে।
চারারগোপের আড়ৎদার শফিক বলেন, গত মাসেও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁঠালের বেপারীরা (বিক্রেতা) আমাদের কাছে কাঁঠাল বিক্রি করেছিলো। কিন্তু এই মাসের শুরু থেকে পরিমানটা একটু বেড়ে গেছে। তবে আমাদের কাছেও অনেক খুচরা ক্রেতা রয়েছে যারা প্রতিদিনই আমাদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমানে কাঁঠাল নিচ্ছেন।